প্রবাসে গিয়ে দেশে আসার অনিশ্চয়তায় দোয়ারাবাজারের আবু বকর ও তার স্ত্রীর
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের কালাপশি গ্রামের সৈয়দুর রহমান ও সুনারা বেগম দম্পতির সন্তান আবু বকর পারিবারিক সিদ্ধান্তে ২০২৪ সালের ১১ জানুয়ারি বিয়ে করেন ছাতক উপজেলার জাউয়া বাজার এলাকার মো:শাহাবুদ্দিন অনার্স পড়ুয়া কন্যা সালমা আক্তার (২৮)কে।
বিয়ের পরে ভালোই চলছিলো তাদের সাংসারিক পরিবার। কিন্তু ক'দিন যেতে না যেতেই শুরু হয় পরিবারে অশান্তি।
জানা যায়, আবু বকরের স্ত্রী
সালমা আক্তার (২৮) ২০১২ সালে এসএসসি পাস করেন এবং ২০১৪ সালে জাউয়াবাজার ডিগ্রী কলেজ হতে এইচএসসি পাস করেন। শারিরীক স্বাস্থ্য মোটা আর উচ্চা লম্বা দেহের অধিকারী সালমা আক্তার এইচএসসি পরিক্ষা দেওয়াকালীন তার
উপর নজর পরে একই এলাকার জসিম উদ্দিনের পুত্র
আব্দুস সামাদ (২৯)। এতে সালমার পরিক্ষা চলাকালীন প্রতিদিনই রাস্তায় দাড়িয়ে থাকতো সে। কয়েকদিন যাবার পর মোবাইল নাম্বার চাইলে সালমা আক্তার তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
পরে কোন একভাবে সালমার মোবাইল নাম্বার যোগাড় করে আব্দুস সামাদ। প্রতিদিনই কল দিয়ে দেয় বিয়ের প্রস্তাব, রাজি না হলে দেখায় হুমকি। একপর্যায়ে সৎসাহসী সালমা আক্তার আব্দস সামাদের বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করে ও সামাদের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি ব্লক করে দেয়। সালমার এইচএসসি পরিক্ষা শেষ হওয়ার পরবর্তী সময় বাড়ির বাহিরে না যাওয়ায় আব্দুস সামাদ আর তার দেখা পায়নি। এতে দীর্ঘদিন যাওয়ার পর সালমা এইচএসসি ফলাফল পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি কলেজে অনার্সে ভর্তি হয়। এতে নতুন এই কলেজে জাউয়া এলাকা থেকে দূরে হওয়ায় তা সহজ হয়ে উঠে আব্দুস সামাদের।
দীর্ঘদিন সালমাকে নজরদারি করে রাখে কলেজে আসা যাওয়ার পথে ।
কয়েকদিন পর
বিষয়টি সালমা আক্তারের পরিবার জানাজানি হওয়ায় মেয়ের ইজ্জত আর পরিবারের সম্মান রক্ষায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করতে বিভিন্ন জায়গায় যখনই আলোচনা করেন তাতেই বাঁধা সৃষ্টি করে আব্দুস সামাদ।বেশ কয়েকটি বিবাহের আলোচনা (সমন্ধ)ফিরিয়ে দেয় সে।
দুশ্চিন্তায়, দূর্ভাবনায় দীর্ঘ কয়েকবছর পর ২০২৪ সালের ১১ জানুয়ারি সালমার সম্মতিতে পারিবারিক সিদ্ধান্তে বিয়ে হয় দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের কালাপশি গ্রামের সৈয়দুর রহমান'র প্রথম সন্তান প্রবাসী আবু বকর (২৭) এর সাথে। বিয়েটি পারিবারিকভাবে ছোট পরিসরের আব্দুস সামাদের অজান্তেই সম্পন্ন হওয়। এতে সুখে শান্তিতে স্বামীর সংসার করছিলেন সালমা আক্তার৷ বিয়ের ২-৩ মাস পর স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়ি ছাতকের জাউয়া এলাকায় গিয়ে হঠাৎ দেখা হয়ে যায় আব্দুস সামাদের সাথে। এর পর থেকে শুরু হয় সালমার স্বামীর সংসারে অশান্তি। আব্দুস সামাদকে রেখে
সালমা কেনো অন্য বিয়ে করলো,তার পরিবার অন্য জায়গায় সালমাকে বিয়ে দেওয়ায় আব্দুস সামাদ সালমার পিতা থেকে শুরু করে স্বামীর ও তার বাড়ির লোকজনকেও হত্যা করার হুমকি দেয়। বেশ কয়েকদিন সালমার স্বামীর বাড়িতে ও আসে আব্দুস সামাদ। কিন্তু স্বামীর সংসারে আবদ্ধ হওয়ার পর সালমা তাতেই সারাজীবন কাটাতে চায় আর আব্দুস সামাদকে নিষেধ করে দেয় যেনো তার সাংসারিক জীবনে বাঁধা সৃষ্টি না করে। আব্দুস সামাদ এর পর থেকে আরো বেপরোয়া হয়ে থাকে যে সালমাকে যে কোনো কিছুর বিনিময়ে হলেও সে বিয়ে করবে। কিন্তু সালমা তাতে রাজি নয় এমন পরিস্থিতিতে তার স্বামী
আব্দুস সামাদের নির্যাতনে বাধ্য হয়ে নিজের পরিবারের ইজ্জত রক্ষা করতে আবু বকর তার স্ত্রী সালমা আক্তারকে ২০২৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রবাসের মাটিতে নিয়ে যায়। তবুও রাক্ষুসে স্বভাব থেকে ফিরে যায়নি আব্দুস সামাদ। একসময় তার চোখে শত্রু ছিলো সালমা আক্তারের পরিবার। এখন তার নতুন শত্রু সালমা,তার পিতা-মাতা ও স্বামী। নানা সময় দুই পরিবারকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে সে। তার প্রতিজ্ঞা সালমা যখনই দেশে আসুক সে তাকে বিয়ে করবে।
একপর্যায়ে চলতি বছরের ১৮ মার্চ সালমার স্বামীর বাড়িতে এসে তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। পরে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে তার সাথে বাকবিতন্ডা শুরু করলে সে চলে যায়।
সালমা আক্তার জানান,আমি আব্দুস সামাদের নির্যাতনে বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়ে প্রবাসে আছি। আর আব্দুস সামাদের বিয়ের প্রস্তাবে আমার পরিবার রাজি হওয়ার কারনে আমার পরিবারের উপর নির্যাতন করছে। আমার এখন স্বামীর সংসার হয়েছে তবুও সে আমি ও আমার পিতা-মাতা,স্বামীর পরিবারকে নানান ভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। তার ভয়ে আমি দেশে যেতে পারতেছিনা। আমার পরিবারও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছে।
সালমার পিতা শাহাবুদ্দিন জানান, আব্দুস সামাদ যিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা।
জোরপূর্বক বিয়ের প্রস্তাব আমার পরিবার বিষয়টি মেনে না নেওয়ায় আমরা সামাজিকভাবে উপযুক্ত বিবাহ সম্পন্ন করি।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আব্দুল সামাদ তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আমাদের পরিবারের প্রতি হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন শুরু করে। তিনি প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছে যে সালমাকে তার স্ত্রী বানাবেই এবং এজন্য আমাদের পরিবারের উপর চাপ প্রয়োগ করছে।
মার্চ মাসের ২১ তারিখ আব্দুস সামাদ আমাদের বাড়িতে এসে আমাকে না পেয়ে সালমার মাকে হুমকি দিয়ে যায় যে আমরা কিভাবে সুখে থাকি তা সে দেখে দিবে। কিভাবে মেয়েকে দেশে আনি তাও তার দেখার আছে। সে যেকোন সময় আমাদের ক্ষতি করতে পারে। তার ভয়ে আমরা আইনের ব্যবস্থা নিতে পারছি না এবং কোথাও যেতেও পারতেছিনা।
সালমার স্বামী আবু বকর জানান, বিষয়টি আমার আগে জানা ছিলোনা। বিয়ের ক'দিন পর শ্বশুর বাড়িতে গেলে বিষয়টি জানা যায়। কিন্তু যেহেতু বিবাহ হয়েছে এখন তো আর চাইলেই একটা সম্পর্কের বিচ্ছেদ হতে পারেনা। কারণ একটি মেয়ের বিয়ের আগে অনেক বিয়ের প্রস্তাব আসে এটা স্বাভাবিক।
৪র্থ তলা, হাউজ# ২৭, রোড# ১ ব্লক# এ বনশ্রী , রামপুরা, ঢাকা।
সম্পাদক
মোজাম্মেল দিলন
প্রকাশক
সবার কথা মিডিয়া লিমিটেড
সবার কথা মিডিয়া লিঃ এর একটি প্রতিষ্ঠান।
নিউজ
ফোনঃ +৮৮ ০২২২৪৪০৬০৭০
Email: sobarkothabdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +৮৮ ০২২২৪৪০৬০৭০
Email: sobarkothabdnews@gmail.com
©২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || sobarkotha.com